প্রায় ২০ বিঘা জমিতে কাসাভার চাষ শুরু করেছে একটি প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধান খাদ্য এবং উৎপাদনের দিক থেকে গম, ধান, ভুট্টা, গোল আলু ও বার্লির পরই কাসভার স্থান। পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় চাষ হচ্ছে কাসাভা। কাসাভা ফল দেখতে মিষ্টি আলুর মতো। আর গাছ শিমুল গাছের পাতার মতো বলে শিমুল আলু বলা হয়। গাছের নিচ থেকে চারপাশে ফল ধরে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কাসাভার চাষ হলেও এই উপজেলায় প্রথম চাষ করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোস্তফা কামাল বলেন, চারা রোপনের ৬ মাস পর টিউবার সংগ্রহ করা যায়। সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করলে হেক্টর প্রতি ২০-২৫ টন কাসাভা উৎপাদন করা যায়। কাসাভা খরা সহনশীল গাছ। খরার সময় ১৫-২০ দিন পানি পেলে ফলন বৃদ্ধি পায়। কাসাবার বংশ বিস্তার সাধারণত স্টেম কাটিংয়ের মাধ্যমে করা হয়। আট থেকে ১২ মাসের দুই থেকে তিন সেন্টিমিটার পুরু রোগ ও পোকামাকড় মুক্ত কাণ্ড চারা তৈরির জন্য আদর্শ।

তিনি আরও বলেন, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড থেকে আসা দুটি জাতের কাসাভা বাংলাদেশে চাষ হয়। একটি লাল ও আরেকটি সাদাটে হয়। কাসাভা চাষে সার ব্যবহারে ফলন বৃদ্ধি পায়। এতে উৎপাদন খরচ কম। কাসাবা চাষে কোনো ঝামেলা নেই বললেই চলে। কাসাবা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত কর্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ কন্দল জাতীয় ফসল। খাদ্য হিসেবে কাসাবার পরিস্কার টিউবার সরাসরি বা সেদ্ধ করে অথবা কাঁচাও খাওয়া যায়। কাসাবা থেকে উন্নতমানের সাদা আটা পাওয়া যায়, যা দিয়ে রুটি, বিস্কুট, চিপসসহ নানাবিধ খাবার তৈরি হয়।

দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার শাফিয়ার রহমান বলেন, কাসাভা একটি অর্থকরী ফসল। এই জেলায় দেবীগঞ্জেই এবার প্রথম কাসাভা চাষ হচ্ছে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোস্তফা কামাল প্রায় ২০ বিঘা জমিতে কাসাবা চাষ করছেন। কাসাভা হলো উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের আলুজাতীয় ফসল যা পৃথিবীর প্রায় ২০০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। রোগজীবাণু ও পোকামাকড়ের আ’ক্রম্ণ প্রতিরোধী এ ফসল সহজেই অনুর্বর জমি ও খরা প্রবণ এলাকায় চাষ করা যায়। স্বল্পমেয়াদী লাভজনক এ কাসাবা সম্পর্কে তৃণমূল পর্যায়ে কৃষকদের বুঝাতে পারলে চাষিদের মাঝে উৎপাদনের উদ্দীপনা সৃষ্টি হবে।